হৃৎপিণ্ড সুস্থ রাখতে চান? জেনে নিন কী খাবেন?
হৃদরোগ থেকে বাঁচার জন্য স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খাওয়া ও শারীরিক অনুশীলন প্রয়োজন। এ ধরনের কয়েকটি খাবার নিয়েই আজকের টিপস। বার্লি ওট ও বার্লির মতো খাবারে আছে বিটা-গ্লুকেন। গবেষণায় দেখা গেছে, এসব খাবার কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে।
তৈলাক্ত মাছ মাছের তেল হৃৎপিণ্ডের জন্য খুবই উপকারী। বিশেষ করে যেসব মাছে ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড আছে, সেগুলো খুব উপকারে আসে।
শাক হৃিপণ্ডের জন্য সালাদ ও প্রচুর সবুজ শাকসবজি খেতে হবে। পালংশাক, সরিষাশাক, বাঁধাকপি ও ফুলকপিতে আছে প্রচুর ভিটামিন, মিনারেল ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এগুলো হৃত্স্পন্দন ঠিক রাখে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে।
বাদাম ও বীজ বাদামে আছে প্রোটিন ফাইবার, যা হৃদরোগ প্রতিরোধে বেশ কার্যকর। এতে আছে ভিটামিন-ই, যা ক্ষতিকর কোলেস্টেরল কমাতে সহায়তা করে। বাজারে বিভিন্ন ধরনের বাদাম পাওয়া যায়। এর মধ্যে আখরোট বাদাম, কাজুবাদাম, তিসি বীজ সবচেয়ে ভালো।
বিট প্রচুর উপকারী নাইট্রিক অক্সাইড থাকায় বিট রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ভূমিকা রাখে। বিট সালাদ হিসেবে কিংবা জুস করে খাওয়া যায়।
অলিভ অয়েল অলিভ অয়েলে আছে মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাটি এসিড। এটি রক্তচাপ কমাতে ও হৃদরোগ থেকে দূরে থাকতে সহায়তা করে। তবে এটি অল্প তাপমাত্রায় রান্না করতে হবে। খুব বেশি তাপে এর গুণাগুণ নষ্ট হয়ে যায়।
ডাল ও শিমজাতীয় খাবার মসুর ডাল, ছোলা এবং সব ধরনের শিমে প্রচুর পরিমাণে দ্রবণীয় আঁশ থাকে। এটি রক্তের কোলেস্টেরল ও ট্রাইগ্লিসেরাইডের মাত্রা কমিয়ে হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।
কম ফ্যাটের দুগ্ধপণ্য দুধ, পনির ও দইয়ের মতো দুগ্ধজাত পণ্যেরও রক্তচাপ কমানোর গুণ আছে। গবেষকরা বলছেন, দীর্ঘদিন নিয়মিত দই খেলে হৃদরোগের আশঙ্কা ২০ শতাংশ কমে যায়।
লবণ নয় লবণ হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। তাই রান্নায় লবণ কম করে ব্যবহার করতে হবে। বাড়তি লবণ ব্যবহার করে এমন খাবার এড়িয়ে চলতে হবে।
ডায়াবেটিস দুই ধরনের নয়, বাস্তবে পাঁচ ধরনের হয় !
আগে অনেকেরই ধারণা ছিল ডায়াবেটিস দুই ধরনের হয়ে থাকে। তবে সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা বলছেন, ডায়াবেটিস আসলে পাঁচটি ভিন্ন ধরনের রোগ এবং এর প্রত্যেকটির ক্ষেত্রে আলাদা চিকিৎসা দেয়া যেতে পারে। ডায়াবেটিস মূলত: ‘রক্তে অনিয়ন্ত্রিত সুগার লেভেল’ হিসেবে চিহ্নিত একটি রোগ এবং এখন পর্যন্ত সাধারণত একে দুটিভাগে ভাগ করা হয় – টাইপ ১ এবং টাইপ ২।
সাম্প্রতিক গবেষণার ভিত্তিতে সুইডেন এবং ফিনল্যান্ডের গবেষকরা মনে করছেন, তাঁরা ডায়াবেটিস সম্পর্কিত আরও জটিল একটি চিত্র খুঁজে পেয়েছেন এবং এর ফলে এই রোগ নিরাময়ে প্রত্যেক ব্যক্তিকে আলাদা চিকিৎসা দেয়ার বিষয়টি সামনে চলে আসতে পারে। তারা বলছেন, এই গবেষণা ভবিষ্যতে ডায়াবেটিস চিকিৎসার ক্ষেত্রে একটি নতুন যুগের সূচনা করতে পারে, তবে চলমান চিকিৎসার ক্ষেত্রে পরিবর্তন আসতে হয়তো আরও সময় লাগবে। বিশ্বে প্রতি ১১ জনে একজন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হন – আর একবার আক্রান্ত হলে রোগীদের হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক বা মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ, অন্ধত্ব, কিডনি অচল হয়ে পড়া এবং অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কেটে ফেলার মতো ঝুঁকি বেড়ে যায়।
টাইপ ১ ডায়াবেটিস হলো মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পর্কিত রোগ। এটি শরীরের ইনসুলিন তৈরির ক্ষমতা বা বেটা সেলকে আক্রমণ করে, ফলে রক্তে সুগার বা চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে প্রয়োজনীয় এই হরমোনটির পর্যাপ্ত উৎপাদন হয়না।
অন্যদিকে, টাইপ ২-কে মনে করা হয় অনিয়ন্ত্রিত জীবনধারার সঙ্গে সম্পর্কিত একটি রোগ হিসেবে, যেখানে শরীরের অতিরিক্ত চর্বি ইনসুলিনের কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করে। ডায়াবেটিস নিয়ে সর্বশেষ গবেষণাটি করেছে সুইডেনের লান্ড বিশ্ববিদ্যালয় ডায়াবেটিস কেন্দ্র এবং ফিনল্যান্ডের ইন্সটিটিউট ফর মলিক্যুলার মেডিসিন। আর এতে ১৪,৭৭৫ রোগীর ওপর নজরদারী করা হয়, বিস্তারিত বিশ্লেষণ করা হয় তাদের রক্তের। গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে ল্যানসেট ডায়াবেটিস অ্যান্ড এন্ডোক্রিনোলজিতে। এতে দেখানো হয়েছে যে ডায়াবেটিস রোগীদের পাঁচটি সুনির্দিষ্ট ক্লাস্টারে ভাগ করা যায়।